ব্যাটারি কী? What is battery?বিদ্যুতিক সেল কী? ব্যাটারীর ইতিহাস ও প্রকার|

ব্যাটারি কী?What is battery?


একাধিক বিদ্যুতিক সেলের সমষ্টি কে ব্যাটারি(Battery) বলে।যার ক্যামিক্যাল রিঅ্যাকশন এর ফলে সার্কিট এর মধ্যে ইলেক্ট্রন এর প্রবাহ ঘটে।সব ব্যাটারি দুইটি বেসিক কপমেন্ট নিয়ে গঠিত : – ১) ইলেক্ট্রোড (Electrode) ও ২) ইলেক্ট্রোলাইট (Electrolyte)।ব্যাটারি কী ভাবে কাজ করে এ বিষয়ে জানার আগে আমরা বিদ্যুতিক সেল(Electric cell, ইলেক্ট্রোলাইট (Electrolyte) ইলেক্ট্রোড (Electrode) সম্পর্কে ভালো করে জেনে নেবো।

বিদ্যুতিক সেল(Electric cell) :

ছােট কক্ষের মধ্যে রাসায়নিক পদার্থ জমা থাকার ফলে ঐ ছােট কক্ষের মধ্যে যে , ইলেকট্রোমেটিভ(Electromotive) ফোর্স সৃষ্টি হয় তাকে সেল বলে। একটু অন্য ভাবে বললে কেমিক্যাল রিঅ্যাকশন থেকে কারেন্ট (Current) তৈরি করার মেশিন হলো বৈদ্যুতিক সেল। এই জন্য যে সেল রাসায়নিক শক্তি থেকে বৈদ্যুতিক শক্তি তৈরি করে সেই বৈদ্যুতিক সেল কে বৈদ্যুতিক রাসায়নিক সেল বা ইলেক্ট্রো কেমিক্যাল সেল বলে।

বৈদ্যুতিক সেল এর প্রকার :

  • ১) প্রাইমারি সেল
  • ২)সেকেন্ডারি সেল

১) প্রাইমারি সেল :-

যে সেল একবার ব্যবহার করার পর আর দ্বিতীয়বার ব্যবহার করা যায় না তাকে প্রাইমারী সেল বলে। অর্থাৎ এই সেল রিচার্জ করা যায় না । টর্চ লাইটের ব্যাটারী , ক্যামেরা , টিভি রিমোট এইগুলি সব প্রাইমারি সেলের উদাহরণ ।প্রাথমিক সেল এর রাসায়নিক পদার্থের রাসায়নিক শক্তি শেষ হয়ে যাওয়ার ফলে বিদ্যুৎ প্রবাহ বন্ধ হয়, তার ফলে আমাদের ব্যাটারির সেল টি বার বার পরিবর্তন করতে হয়।আর আমরা যদি এই রকম সেল কে পুনরায় কাজ করাতে চাই তাহলে আমাদের ওই সেল এর ভেতর রাসায়নিক পদার্থ যোগ করতে হবে।কিন্তু মনে রাখতে হবে আমরা এটিকে পুনরায় চার্জ করতে পারি না।

২)সেকেন্ডারি সেল :-

যে সেল একবার ব্যবহার করার পর আবার চার্জ করে ব্যবহার করা যায় তাকে সেকেন্ডারী সেল বলে।যেমন — বাস , ট্রাক , বাড়ির ইনভার্টারে আমরা এই সেলের ব্যবহার করে থাকি ।সেকেন্ডারি সেল এর কোষ বৈদ্যুতিক শক্তি কে রাসায়নিক শক্তি তে সংরক্ষণ করে এবং পরে ওই রাসায়নিক শক্তি কে বৈদ্যুতিক শক্তিতে রূপান্তর করে।
সেকেন্ডারি সেলর দাম সবসময় বেশি হয় যদি আমি মার্কেটে ৩.৭ ভোল্ট এর প্রাইমারি সেল কিনি তাহলে সেটা আমরা ১০ টাকা তে পেয়ে যায় কিন্তু যখন আমরা ওই একই ভোল্ট এর একটি সেকেন্ডারি সেল কিনি তাহলে তার দাম প্রাইমারি সেলের থেকে অনেক গুন বেশি হয়।

ইলেক্ট্রোলাইট (Electrolyte):

ইলেকট্রোলাইট এক প্রকার (জল যুক্ত) রাসায়নিক পদার্থ – যার ভিতর দিয়ে সহজে কারেন্ট প্রবাহিত(Flow) হতে পারে । যেমন — সালফিউরিক এসিড , নাইট্রিক এসিড ইত্যাদি ।

ইলেক্ট্রোড (Electrode) :

যে পরিবাহীর ভেতর দিয়ে ইলেকট্রোলাইটের(Electrolyte) মধ্যে কারেন্ট খুব সহজেই প্রবেশ করতে পারে এবং কারেন্ট বাইরে আসতে পারে তাকে ইলেকট্রোড বলে । ইলেকট্রোড দুই প্রকার : – পজেটিভ ইলেকট্রোড(anode)(cathode)(+) নেগেটিভ ইলেকট্রোড( cathode)পজেটিভ ইলেকট্রোড(cathode)(+): যে পরিবাহীর মধ্য দিয়া ইলেকট্রোলাইট হইতে কারেন্ট বাহির হইয়া আসে তাকে পজেটিভ ইলেকট্রোড বলে । যেমন — তামা , রূপা , কার্বন ইত্যাদি । নেগেটিভ ইলেকট্রোড(anode)(-): যে পরিবাহীর মধ্য দিয়া ইলেকট্রোলাইটে কারেন্ট প্রবেশ করিতে পারে তাকে নেগেটিভ ইলেকট্রোড(anode)(-) বলে । যেমন দস্তা , সীসা , এ্যালুমিনিয়াম ইত্যাদি ।

ব্যাটারি কী ভাবে কাজ করে :


যখন ব্যাটারি পজেটিভ ইলেকট্রোড(cathode)(+) আর নেগেটিভ ইলেকট্রোড(anode)(-) কে কোনো সার্কিট এর সাথে জোড়া হয় তখন ব্যাটারির মধ্যে এনোড(-) আর ইলেক্ট্রোলাইট এর কেমিক্যাল রিঅ্যাকশন (Chemical reaction) শুরু হয়।এই রিঅ্যাকশন আর ফলে সার্কিট এর মধ্যে ইলেক্ট্রন প্রবাহ শুরু হয়ে যায় ।

সেই ইলেক্ট্রন(electron)গুলি প্রবাহিত হয়ে ক্যাথোড এ যায় যেখানে আর একটি কেমিক্যাল রিঅ্যাকশন(Chemical reaction) শুরু হয়। এই ভাবেই ইলেক্ট্রন(electron) প্রবাহিত হতে থাকে।যখন এনোড আর ক্যাথোড এর মধ্যে থাকা ইলেক্ট্রোলাইট (Electrolyte) শেষ হয় যায় তখন আর কেমিক্যাল রিঅ্যাকশন করতে পারে না।যার ফলে ইলেক্ট্রন(electron) প্রবাহিত হতে পারেনা। তখন আমরা তখন ওই ব্যাটারি টিকে খারাপ ব্যাটারি বলে থাকি।

ব্যাটারির ইতিহাস :


১৭৯৯ সালে ইটালিয়ান বিজ্ঞানী আলেসান্দ্রো ভোল্টা( Alessandro Volta) প্রথম ব্যাটারি খোঁজ করেন ।যেটাকে উনি বল্টিক পাইল(voltaic pile)নাম দেন।বল্টিক পাইলে তামা আর জিঙ্ক এর জোড় ব্যবহার করা হতো। তামা আর জিঙ্ক এর প্লেট কে একের পর এক রেখে (একটির উপর আর একটি ) ওয়াইনে (যেটা এখানে ইলেক্ট্রোলাইট এর কাজ করে) ভেজানো কাপড় বা কাঠ বোর্ড এর মাধ্যমে দুটি প্লেট কে আলাদা করা হয়। বল্টিক পাইল(voltaic pile) সর্বপ্রথম নিরন্তর বিদ্যুৎ এবং স্থির প্রবাহ উৎপন্ন করেছিলেন। উনি আরো বেশি ভোল্টেজ উৎপন্ন করার জন্য বিভিন্ন ধরণের ধাতুর ব্যবহার করেছিলেন যার মধ্যে রুপো আর দস্তা দিয়ে সবথেকে বসে সফল হয়েছিলেন।

ব্যাটরির প্রকার :


ব্যাটারি দুই প্রকার এর হয় : ১) প্রাইমারি ব্যাটারি(Primary Battery) ২) সেকেন্ডারি ব্যাটারি(Secondary Battery)


১) প্রাইমারি ব্যাটারি :

প্রাইমারি ব্যাটারি এমন একটি ব্যাটারি যেটি এক বার ব্যবহার হয়ে যাওযার পর পুনরায় রিচার্জ করে যায় না।প্রাইমারি ব্যাটারি ইলেক্ট্রো কেমিক্যাল সেল দিয়ে তৈরি হয়।
প্রাইমারি ব্যাটারি অনেক রকমের পাওয়া যায় যেমন হাত ঘড়ির ব্যাটারি ,টিভি রিমোট এর ব্যাটারি এই ব্যাটারি গুলি মূলত সেই এপ্লিকেশন এ ব্যবহার হয় যেখানে চার্জিং করা অসম্ভব।প্রাইমারি ব্যাটারিতে কিছু নির্দিষ্ট শক্তি থাকে এবং ডিভাইস গুলিতে এই ব্যাটারি এমন ভাবে ডিসাইন করা হয় যেটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য চলতে পারে।
এই ব্যাটারি এর কিছু উদাহরণ :- রিমোট কন্ট্রোল ,হাত ঘড়ি ,বাচ্চাদের খেলনা ইত্যাদি।

সেকেন্ডারি ব্যাটারি :-

এটি এমন একটি ব্যাটারি যেটাতে ইলেক্ট্রো কেমিক্যাল সেল থাকে এবং তাদের দ্বারা চালিত রাসায়নিক বিক্রিয়াটি সামান্য ভোল্টেজ এর মাধ্যমে রিসোর্সে হতে পারে যার কারণে এটিকে রিচার্জেবল ব্যাটারি বলে।সেকেন্ডারি ব্যাটারি সেই সব ডিভাইস গুলি টা ব্যবহার করা যেখানে প্রাইমারি ব্যাটারি ব্যবহার করা খুব ব্যায়বহুল বা অযোক্তিক। কম ক্ষমতার সেকেন্ডারি ব্যাটারি আমরা আমাদের স্মার্ট ফোনে এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইস এ ব্যাবহার করে থাকি। আবার বেশি ক্ষমতার সেকেন্ডারি ব্যাটারি যানবাহন এ ব্যাবহার করা হয়।

বাড়ির ইনভার্টার এর সাথে যুক্ত করে আমরা বিদ্যুৎ সাপ্লাই ও করে থাকি ,রিচার্জেবল ব্যাটারি তৈরি করতে প্রাইমারি ব্যাটারির থাকে অনেক বেশি খরচ হয়।সেকেন্ডারি ব্যাটারি কে রসায়নের ভিত্তে তে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করে হয়েছে ।এটি বেশ গুরুত্ব পূর্ণ কারণ ব্যাটারির রসায়নের কারণেই ব্যাটারির কিছু বৈশিষ্ট যেমন -দাম ,শক্তি ,জীবন চক্র ,ইত্যাদি প্রকাশিত হয়।

সেকেন্ডারি ব্যাটারি মূলত চার ভাগে বিভক্ত :

১)লিথিয়াম-আয়ন (লি-আয়ন)
২)নিকেল ক্যাডমিয়াম (নি-সিডি)
৩)নিকেল-ধাতব হাইড্রাইড (Ni-MH)
৪)লেড এসিড

আমাদের পূর্বের পোস্ট গুলি পড়তে আপনি নিচের লিংক এ ক্লিক করুন:

হ্যালো বন্ধুরা, এই পোস্টে আমরা আপনাদের ব্যাটারি কী?What is battery? বিদ্যুতিক সেল কী?What is Electric cell? বৈদ্যুতিক সেল এর প্রকার : ১) প্রাইমারি সেল ২)সেকেন্ডারি সেল ও ব্যাটারীর ইতিহাস ও প্রকার এগুলি সম্পর্কে আপনাদের বোঝানোর চেষ্টা করেছি| যদি আপনার এই পোস্ট টি ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই আপনাদের বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন|এছাড়াও আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা পরামর্শ থাকলে কমেন্ট বাক্স এ অবশ্যই জানাবেন |

29 thoughts on “ব্যাটারি কী? What is battery?বিদ্যুতিক সেল কী? ব্যাটারীর ইতিহাস ও প্রকার|”

  1. Hello! I’ve been reading your blog for a long time now and finally got the bravery to go ahead and give
    you a shout out from Humble Texas! Just wanted to mention keep up the excellent job!

    Reply
  2. I know this if off topic but I’m looking
    into starting my own weblog and was curious what all is
    required to get set up? I’m assuming having a blog like yours
    would cost a pretty penny? I’m not very web smart so I’m not 100% positive.

    Any suggestions or advice would be greatly appreciated.
    Appreciate it

    Reply
  3. I’m really enjoying the design and layout
    of your website. It’s a very easy on the eyes which makes it
    much more enjoyable for me to come here and visit more often. Did you hire out a designer to create your theme?

    Great work!

    Also visit my web-site THC Gummies

    Reply
  4. Thanks for the marvelous posting! I seriously enjoyed reading it, you happen to be a great author.
    I will make certain to bookmark your blog and will often come
    back later on. I want to encourage one to continue your great posts, have a nice morning!

    Here is my web blog :: Observer

    Reply
  5. You’re so awesome! I do not think I have read through a single thing like this before.

    So good to discover someone with a few original thoughts on this subject matter.

    Seriously.. thank you for starting this up. This web site is something that’s needed on the web,
    someone with a little originality!

    Review my web page; marijuana dispensaries

    Reply
  6. Thanks for your personal marvelous posting! I really enjoyed reading it,
    you’re a great author. I will be sure to bookmark
    your blog and will often come back down the road.
    I want to encourage you to continue your great
    job, have a nice evening!

    Feel free to surf to my web blog THC Gummies

    Reply
  7. Do you have a spam issue on this website; I also am a blogger, and I was wondering your situation; many of us have developed some nice methods and we are
    looking to trade strategies with other folks, why not shoot me an email if
    interested.

    Reply
  8. I have been surfing online more than three hours today, yet I never found any interesting article
    like yours. It is pretty worth enough for me.
    In my opinion, if all webmasters and bloggers made good content as you did, the net will be a lot more useful than ever before.

    Reply

Leave a Comment

error: Content is protected !!