রেজিস্টর হলো একটি ইলেক্ট্রিক্যাল কম্পোনেন্ট বা উপাদান যা বৈদ্যুতিক সার্কিট এ বিদ্যুৎ প্রবাহ নিয়ন্ত্রন করে। বা এ রকম ভাবেও বলতে পারি ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি তে কারেন্ট প্রবাহকে বাধা দেয়ার কাজে যে উপাদান বা কম্পোনেন্ট ব্যবহৃত হয় তাকে রেসিস্টর(Resistor) বলে।
আর, রেসিস্টর বা পরিবাহীর যে বৈশিষ্ঠের কারণে পরিবাহীর মধ্যে দিয়ে কারেন্ট প্রবাহ কে বাধা দেয় সেই বৈশিষ্ট বা ধর্ম কে রেসিস্টেন্স বলে এক কোথায় রেসিস্টেন্স মানে হলো বাধা দেওয়ার ক্ষমতা।
প্রকাশ, প্রতীক ও একক:
রোধকে R দিয়ে প্রকাশ করে হয়। এর একক ওহম (Ω). নিচের চিত্রে রেজিস্টরের(Resistor) কিছু প্রতীক দেওয়া হলো যেগুলো বিভিন্ন সার্কিট বোর্ড ও সার্কিট ডায়াগ্রামে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
প্রতিরোধকের প্রকার (Types of Resistor)
রেসিস্টর প্রধানত দুই প্রকার
১) রৈখিক রেসিস্টর (Linear Resistor)
২) অরৈখিক রেসিস্টর (Non-Linear Resistor)
এদের কে আবার বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা হয়েছে যে গুলি আমি নিচে আলোচনা করবো

১)রৈখিক রেসিস্টর (Linear Resistor)
রৈখিক রেসিস্টর হল এমন প্রকার রেসিস্টর যার মান(Value) প্রয়োগ করা তাপমাত্রা এবং ভোল্টেজের পরিবর্তনের সাথে পরিবর্তিত হয় তারা রৈখিক রেসিস্টর হিসাবে পরিচিত।রৈখিক রেসিস্টর কে আবার দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে
- ফিক্সড রেসিস্টর (Fixed Resistor)
- ভেরিয়েবল রেজিস্টর (Variable Resistor)
ফিক্সড রেসিস্টর (Fixed Resistor) এর নাম শুনলেই বুঝতে পারি যে এটি কি ধরণের রেসিস্টর হতে পারে. ফিক্সড মানে যার মান (ভ্যালু ) আমরা বদলাতে পারবো না রেজিস্টার টি তৈরী করার সময় তার মধ্যে যে মান নির্দিষ্ট করে দেয় সেটিই থাকে .তাই এর রেসিসটিভিটি বা বাধাদেওয়ার ক্ষমতা কে কম বেশি করতে পারি না, সেই কারণে আমরা এই ধরণের রেসিস্টর কে ফিক্সড রেসিস্টর বলি. ফিক্সড রেজিস্টার কেউ আবার বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা হয়
- ১.কার্বন রেসিস্টর
- কার্বন ফিলা রেসিস্টর
- সলিড রেসিস্টর
- ২.মেটাল রেসিস্টেন্স
- মেটাল ফিলা রেসিস্টর
- মেটার অক্সাইড ফিলা রেসিস্টর
- ৩.মেটাল গ্লেজড টাইপ রেসিস্টরফিক্সড রেজিস্টর
- কার্বন কম্পোজিট
- থিক এবং ফিল্ম
- কার্বন ফিল্ম
- প্রিন্টেড কার্বন
- কার্বন পাইল
- মেটাল ফিল্ড
- মেটাল অক্সাইড ফিল্ড
- ওয়্যার উন্ড
- ফয়েল
ভেরিয়েবল রেজিস্টর (Variable Resistor) যে Resistor এর মান ফিক্সড থাকে বা যে রেজিস্টরের মান তৈরি করার সময় নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয় এবং যার মান পরিবর্তন করা সম্ভব না তাকে ফিক্সড বা অপরিবর্তনশীল Resistor বলে।এডজাস্টেবল
পটেনশিওমিটার
রেজিস্ট্যান্স ডিকেড বক্স
২) অরৈখিক রেসিস্টর (Non-Linear Resistor)
অরৈখিক রেসিস্টর (Non-Linear Resistor) হল এমন প্রকার রেসিস্টর যার মান(Value) প্রয়োগ করা তাপমাত্রা এবং ভোল্টেজের পরিবর্তনের সাথে পরিবর্তিত হয় এবং ওহমের আইনের উপর নির্ভর করে না। বিভিন্ন ধরণের অরৈখিক রেসিস্টর গুলি হল:
- থার্মিস্টর Thermistors
- ভ্যারিস্টার্স Varisters
- ফটো রেসিস্টরস Photo resistors
রেজিস্টরের কালার কোড কী?
রেজিস্টরের বাইরে তার কোনো মান বা ভ্যালু দেওয়া থাকে না।এবার প্রশ্ন হল আমরা কি করে রেসিস্টরের মান নির্ণয় করবো। আমরা রেসিস্টর এর মান বুঝতে পারি তার ওপরের কালার দেখে আর এই কালার গুলােকে রেজিস্টরের কালার কোড বলে । কালার কোড এক একটি প্যাচকে ব্যান্ড বলে । রেজিস্টরে সাধারণত সর্বনিন্ম চার ব্যান্ড থাকে । এছাড়া ৫ ও ৬ ব্যান্ডের কালার কোড রেজিস্টর পাওয়া যায় । এতে সর্বমােট ১২ প্রকার কালার ব্যবহিত হয়ে থাকে । প্রতিটি কালারে মান আছে তা চার্টের মাধ্যমে দেওয়া হলাে

রেজিস্টরের কাজঃ
সার্কিটে কারেন্ট প্রবাহে বাধা প্রদান করা বা ভোল্টেজ ড্রপ ঘটানোই রেজিস্টরের প্রধান কাজ। এক্ষেত্রে প্রশ্ন আসতে পারে কোন সার্কিটে বা কোন পার্টসকে কম ভোল্ট বা কারেন্ট প্রবাহে বাধা প্রদান করার প্রয়োজন পরে।
এ বিষয়টি একটি উদাহরনের মাধ্যমে আমরা সহজে বুঝতে পারব, ধরুন একটি সার্কিটে এল.ই.ডি.( লাইট ইমেটিং ডায়োড ) আছে যার ভোল্টেজ রেঞ্জ ১.৫ থেকে ৩ ভোল্ট। এখন কোন কারনে যদি সার্কিটে সোর্স ভোল্টেজ ৩ ভোল্টের বেশি চলে আসে তখন কম্পোনেন্ট (এল ই ডি ) টি নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
রেজিস্টর ব্যবহার
- এ জাতীয় বিষয় যেনো না ঘটে এর জন্য সার্কিটে রেজিস্টর ব্যবহার করা হয়। Resistor এল ই ডি এর ক্ষেত্রে ৩ ভোল্টের বেশি ভোল্টেজ কে ড্রপ করে দিবে। এছাড়া রেজিস্টর প্রয়োজন মোতাবেক কারেন্ট ও ভোল্টেজ সরবরাহ করে থাকে।
- আমরা এখানে শুধুমাত্র একটি এল ই ডি এর ক্ষেত্রে উদাহরণ দিলাম। কিন্তু Resistor মূলত সকল ক্ষেত্রেই এই ধরনের কাজ করে থাকে।
সার্কিটে Resistor সংযোগ পদ্ধতিঃ
সিরিজ সার্কিটে সংযোগ:
- সিরিজ একটি ইংরেজি শব্দ যার বাংলা অর্থ হলো ধারাবাহিকভাবে। তাহলে এই ক্ষেত্রে একাধিক লোড (রেজিস্টর) একের পর এক বৈদ্যুতিক সোর্সের সাথে সংযুক্ত করে কারেন্ট প্রবাহের একটি পথ তৈরি করা হয়।
প্যারালাল সার্কিটে সংযোগ:
একাধিক লোড (রেজিস্টর) বৈদ্যুতিক উৎসের সাথে আড়াআড়িতে এমনভাবে (নিচের চিত্রের মতো) সংযুক্ত করা হয় যাতে কারেন্ট প্রবাহের একাধিক পথ থাকে।
রেজিস্টরের মান নির্ণয় পদ্ধতি লেখাটি পড়তে এখানে ক্লিক করুন।
সোর্সঃ ওয়িকিপিডিয়া
আমাদের পূর্বের পোস্ট গুলি পড়তে আপনি নিচের লিংক এ ক্লিক করুন:
- ডায়োড কি?|ইতিহাস | কার্যপ্রণালী |Forward bias | Reverse bias
- ভোল্টেজ(Voltage) কী?ভোল্টেজ(Voltage) এবং কারেন্ট মধ্যে পার্থক্য
- কারেন্ট কি ?What is Electric Current? in Bengali
- AC ও DC মধ্যে প্রার্থক্য।
- তড়িৎ প্রবাহের উৎপত্তি
- পারমাণবিক গঠন
- ব্যাটারি কী? বিদ্যুতিক সেল কী? ব্যাটারীর ইতিহাস ও প্রকার
- ওহমের সূত্র
- একটিভ কম্পোনেন্ট ও প্যাসিভ কম্পোনেন্ট এর মধ্যে পার্থক্য
যদি আপনার এই পোস্ট টি ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই আপনাদের বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন|এছাড়াও আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা পরামর্শ থাকলে কমেন্ট বক্স এ অবশ্যই জানাবেন।
1 thought on “What is a Resistor?রেজিস্টর কি”